দুই বছর করোনা ভাইরাসের চোখ রাঙ্গানিতে জীবন যেন স্তব্ধ হয়ে গেছিল, এমনকি প্রাণ পর্যন্ত চলে গেছিল বহু মানুষের। করোনার হাত থেকে মুক্তি পেতেই মানুষ সম্মুখীন হল অ্যাডিনো ভাইরাস (Adenovirus) নামক মারাত্মক এক রোগের। তবে এই ভাইরাস এ মূলত আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাই। বিভিন্ন জেলা এমনকি খাস কলকাতাতেও কোন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের শিশু বিভাগের বেড খালি নেই। এখনো অবধি পশ্চিমবঙ্গে শ্বাসকষ্ট ও জ্বর সর্দি কাশি জনিত রোগে মৃত্যু হয়েছে ১১ জন শিশুর।
সূচিপত্র (Table of Contents)
![অ্যাডেনোভাইরাস থেকে কিভাবে সাবধান থাকবেন? - How to protect yourself from Adenovirus?](https://bengalinews365.com/wp-content/uploads/2023/02/IMG-20230221-WA0006-1024x512.jpg)
কি কারনে মৃত্যু হয়েছে শিশুদের?
রবিবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে যে ১১ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে তারা অ্যাডিনো ভাইরাসে (Adenovirus) আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে কিনা সে বিষয়ে চিকিৎসকরা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না।তবে এইসব শিশুরা যে মরশুমের জ্বর,সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট এ মারা যায়নি সে বিষয়ে নিশ্চিত চিকিৎসকমন্ডলীরা। অ্যাডিনো ভাইরাস যে এর পেছনের কারণ সে বিষয়ে সন্দেহ করছে বিশিষ্ট চিকিৎসকেরা।
কি বলছেন বিশিষ্ট চিকিৎসকেরা?
অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে সত্যিই চিকিৎসকেরা খুবই চিন্তিত। ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের প্রধান চিকিৎসক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাস প্রসূন গিরি বলেছেন যে, বাচ্চাদের এই সময় আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে জ্বর সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। তবে এখন বাচ্চাদের যে জ্বর বা সর্দি-কাশি হচ্ছে তা সম্পূর্ণ অ্যাডিনো ভাইরাসের কারণে। বাচ্চাদের উপর এই ভাইরাসের প্রভাব খুবই মারাত্মক, তাই সাবধানে থাকতে হবে শিশুদের।
কিভাবে চিহ্নিত করা যায় অ্যাডিনো ভাইরাসের লক্ষণগুলিকে? (Adenovirus symptoms)
এখন আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বাচ্চা থেকে বয়স্ক সবার মধ্যেই জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টের লক্ষণগুলো দেখা যায়। তবে এর মধ্যে থেকে অ্যাডিনো ভাইরাসের লক্ষণগুলিকে আলাদা করবেন কিভাবে? অ্যাডিনো ভাইরাস হলে জ্বর, সর্দি-কাশির সাথে থাকবে গলা ব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে জল পড়া। তবে এইসব লক্ষণগুলি থাকলে অবশ্যই যোগাযোগ করতে হবে বিশিষ্ট চিকিৎসকদের সাথে। কম বয়সী বাচ্চারা এই ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
কোভিড পরবর্তী ভাইরাস
করোনা ভাইরাসের মত জোরালো ভাইরাস যেখানে বাচ্চাদের ক্ষতি করতে পারেনি, সেখানে অ্যাডিনো ভাইরাসের (Adenovirus) দাপটে মৃত্যু হয়েছে ১১ জন শিশুর। এখনো বহু শিশু হাসপাতালে ভর্তি। ভেন্টিলেশন তো দূরের কথা বেড পর্যন্ত খালি নেই সরকারি থেকে বেসরকারি কোন হাসপাতালে। তবে করোনার আগেও উপস্থিত ছিল এই ভাইরাস। চিকিৎসকেরা বলেছেন যে, করোনার আগেও এই ভাইরাসের বাড়ন্ত ছিল। তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে এই ভাইরাসের কারণে বহু শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে বয়স্করাও, তবে শিশুদের মধ্যে এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়।
কি অবস্থা কলকাতার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলির?
এক কথায় বলতে গেলে কলকাতার নামিদামি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বেহাল অবস্থা। কোথাও পর্যাপ্ত বেড খালি নেই। শিশুদের সমস্ত বেড ভর্তি। এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। তবে বাড়ির শিশুকে সযত্নে ও সাবধানে রাখতে হবে তাদের অভিভাবকদেরই।
কি কি সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত?
চিকিৎসকেরা বলেছেন যে, বড়দের সর্দি-কাশি কিংবা জ্বর হলে শিশুদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে। ভিড় এবং জনবহুল এলাকা থেকে শিশুকে যথাসম্ভব দূরে রাখা শ্রেয়। করোনার সময়ে যেরকম মানুষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতো এবং মাস্ক ব্যবহার করত, তেমনি এখন অনুরূপভাবে মানুষকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। অ্যাডিনো ভাইরাস (Adenovirus) মারাত্মক একটি ছোঁয়াচে রোগ, তাই মানুষ যদি সাবধানতা অবলম্বন না করে তাহলে বিপদ বাড়বে।
অ্যাডিনো ভাইরাস (Adenovirus) সমন্ধে আরো জানতে দেখুন -> wikipedia.org/wiki/Adenoviridae
পড়ুন -> Tingling : হাতে-পায়ে “ঝি ঝি” ধরার আসল কারণগুলো কি কি? এটি কি খারাপ লক্ষণ?
পড়ুন -> Osteoporosis: হাঁড় ক্ষয় থেকে মুক্তি পেতে চান? মেনে চলুন এই উপায়গুলি
চোখ রাখুন বেঙ্গলি নিউজ ৩৬৫ এর পাতায়।