Pele : চলে গেলেন ফুটবল সম্রাট পেলে। রেখে গেলেন অসংখ্য স্মৃতি, রেকর্ড, তিনটি বিশ্বকাপ

Pele : চলে গেলেন ফুটবল সম্রাট পেলে। রেখে গেলেন অসংখ্য স্মৃতি, রেকর্ড, তিনটি বিশ্বকাপ

বিদায় নিলেন ফুটবলের ‘কালো মানিক’ পেলে (Pele)। তার আগে অনেক মহান খেলোয়াড় এসেছেন ফুটবল জগতে এবং পরেও অনেকে এসেছেন ও আসবেন। কিন্তু ফুটবলকে বৈশ্বিক খেলায় পরিণত করার গরিমাটি শুধুমাত্র তারই। তিনি এমনই একজন খেলোয়াড় যিনি যে কোনো প্রজন্মের যেকোনো সর্বকালের সেরা টিমে অনায়াসেই জায়গা করে নেবেন।

Pele with world cup trophy in hand
Pele

পেলে (Pele) -এর পরিচয়

তার পুরো নাম এডসন আরেন্টেস ডো নাসচিমেন্টো ভি পেলে (Edson Arantes do Nascimento vi Pele)। তিনি ২৩ শে অক্টোবর ১৯৪০ সালে ব্রাজিলের ট্রেস কোরাকোয়েস, মিনাস গেরাইস (Tres Coracoes, Minas Gerais) -এ জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে গোটা বিশ্বে। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

ব্যক্তিগত জীবন

তিনবার বিয়ে করেছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি। প্রথম বার বিবাহ করেন রোসমেরি দস রেইস চলবি (Rosemeri dos Reis Cholbi, m. 1966; div. 1982)​ কে। দ্বিতীয় বিবাহ করেন আসিরিয়া লেমস সেইকসাস (Assíria Lemos Seixas, m. 1994; div. 2008)​ কে। শেষবার বিবাহ করেন মার্সিয়া একই (Marcia Aoki, m. 2016) কে। প্রথম দুই স্ত্রী এবং দুই বান্ধবী অনিজিয়া মাচাদো (Anizia Machado) ও লেনিতা কার্টজ (Lenita Kurtz) এর সাথে মোট সাত সন্তানের বাবা পেলে (Pele)।

পেলের অসুস্থতা

অসুস্থতার কারণে এবারের বড়দিন সাও পাওলোর হাসপাতালেই কাটিয়েছেন পেলে। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের পর হাসপাতাল থেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন লিও মেসিকে (Lionel Messi)। ২০২১ সাল থেকেই অন্ত্রের ক্যানসারে ভুগছিলেন পেলে (Pele)। ২৯ নভেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ভর্তি করা হয় সাও পাওলো অ্যালবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে। প্রায় গোটা কাতার বিশ্বকাপ তার দেখতে হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি হয়েই। মাঝে একবার রটে গিয়েছিল তিনি নাকি মারা গিয়েছেন। তবে ভক্তদের মুখে হাসি ফুটিয়ে সে খবর মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়। তবে এবার আর ফেরা হলো না ফুটবল সম্রাটের।

পেশাদার জীবন

পেশাদার জীবনে খেলেছেন ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্তোস এবং আমেরিকার ক্লাব নিউ ইয়র্ক কসমসে। কখনো ইউরোপিয়ান ক্লাবে খেলেননি। তাই পেলের (Pele) জেতা হয়নি ব্যালন ডি’ওর। তা সত্ত্বেও তর্ক সাপেক্ষে পৃথিবী সেরা খেলোয়াড় তিনিই। নামের পাশে আছে তিন তিনটি বিশ্বকাপের ট্রফি। সেই সাথে রয়েছে একের পর এক ট্রফি, সম্মান, রেকর্ড এবং অগণিত স্মৃতি।

বিশ্বকাপ

খেলোয়াড় জীবনে পেলে (Pele) চারবার বিশ্বকাপ খেলেছেন। তার মধ্যে বিশ্বকাপ জিতেছেন তিনবার। প্রথম বার ১৯৫৮ সালে, দ্বিতীয় বার ১৯৬২ সালে এবং তৃতীয় বার ১৯৭০ সালে। বিশ্বের আর কোনও ফুটবলারের এই রেকর্ড নেই। ১৯৫৮ সাল এবং ১৯৭০ সালের ফাইনালে গোলও করেছিলেন পেলে। ব্রাজিলের হয়ে খেলতে নেমে মোট ৯২ টি ম্যাচ খেলে ৭৭ টি গোলও করেছিলেন পেলে। যা ব্রাজিলের হয়ে নেইমারের সাথে যুগ্ম ভাবে সর্বোচ্চ গোল। কসমসের হয়ে খেলতে এসেছিলেন কলকাতাতেও। খেলেছেন মোহনবাগানের বিরুদ্ধে।

গোল

এছাড়াও পেলে (Pele) বিশ্বকাপে করেছেন মোট ১২ টি গোল, যা বিশ্বকাপে পঞ্চম সর্বোচ্চ। ক্লাবের হয়ে করেছেন ৭০০ ম‍্যাচে ৬৫৫ টি গোল। যার মধ্যে সান্তোসের হয়ে ৬৩৬ ম্যাচে ৬১৮ গোল এবং কসমসের হয়ে ৬৪ ম্যাচে ৩৭ গোল। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সব থেকে কম বয়সী ফুটবলার হিসেবে গোল করার রেকর্ড রয়েছে তার। তিনি ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে ওয়েলসের বিরুদ্ধে গোল করে এই রেকর্ডটি গড়েছিলেন। সেই সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৭ বছর ২৩৯ দিন। ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপে সর্বকনিষ্ঠ হ্যাট্রিক করা খেলোয়াড়ও তিনি। ওই বিশ্বকাপেই তিনি ১৭ বছর ২৪৪ দিন বয়সে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেন।

শুধু তাই নয় এক ক্লাবের হয়ে সর্বাধিক গোলের রেকর্ডটিও তারই ছিল। যদিও পরবর্তীকালে লিওনেল মেসি বার্সেলোনার হয়ে তার সেই রেকর্ডটি ভেঙে দেন কিছু অসমর্থিত সূত্র অনুযায়ী শোনা যায় পেলে (Pele) নাকি সারা জীবনে এক হাজারেরও বেশি গোল করেছেন। দুটি ভিন্ন বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল করার রেকর্ডটিও এতদিন পর্যন্ত তারই ছিল এবার সেই রেকর্ডে ভাগ বসালেন এমবাপে

বিদায় সম্রাট

ব্রাজিলের এই কিংবদন্তি খেলোয়াড় আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। যত দিন ফুটবল থাকবে, ততদিন মানুষ পেলে (Pele)- এর নাম মনে রাখবে। তার মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন করেছেন বিশ্বের তাবড় তাবড় তারকা থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই। তার মৃত্যুতে শেষ হলো একটি যুগের। শুধু ফুটবলই নয় তার মৃত্যু গোটা বিশ্বের কাছেই এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাকে অন্তিম শয্যায় শায়িত করা হবে ২ বা ৩ রা জানুয়ারি ব্রাজিলের সান্তোসে।

পেলে সম্বন্ধে আরো জানতে পড়তে পারেন -> https://en.m.wikipedia.org/wiki/Pelé

এইরকম আরো খবর পেতে চোখ রাখুন বেঙ্গলি নিউজ ৩৬৫ এর পাতায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *