Site icon Bengali News 365 | বাংলা খবর, প্রতিদিন, বছরের ৩৬৫ দিন।

জানুন ব্লকচেইন সম্পর্কিত সকল গোপন তথ্য এক নজরে

ব্লকচেইন

‘ব্লকচেইন’ (Blockchain) নামটি কে দু’ভাগে বিভক্ত করলে পাওয়া যায় – ব্লক ও চেইন। এই দুটি শব্দই প্রায় সকলের কাছে পরিচিত। কিন্তু যখনই এই দুটি শব্দকে একত্রে উচ্চারণ করা হয় ‘ব্লকচেইন’ হিসেবে, তখনই এই নামটি অচেনা হয়ে দাঁড়ায় বহু মানুষের কাছে।

ব্লকচেইন

বর্তমানের একাংশ ব্লকচেইন প্রযুক্তির সম্পর্কে জ্ঞাত হলেও, বিপুল সংখ্যক মানুষ এখনো পর্যন্ত জানেন না ব্লকচেইন কি বা এই প্রযুক্তির কার্যকারিতা কতটা? আজকের এই প্রতিবেদন আশা করি আপনাদের সকলের পৌঁছে দেবে ব্লকচেইন প্রযুক্তির (Blockchain Technology) সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য।

ব্লকচেইন কি?

ইতিমধ্যে আমরা সকলেই প্রায় ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’ কথাটির সঙ্গে পরিচিত হয়েছে। আমাদের পারিপার্শ্বে যেমন ব্যাংক থাকে, যেখানে আমাদের গচ্ছিত সম্পদ বা অর্থ নিরাপদে রাখা যায়। তেমনি এই ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যাংক হিসেবে পরিচিত হল ব্লকচেইন।

ব্লকচেইন শব্দটি দুটি ভিন্ন ভিন্ন শব্দের সংগঠন। একটি হল ব্লক এবং অপরটি হল চেইন। ডেটা বা তথ্য সংরক্ষণের দীর্ঘ চেইনকে বলা হয় ব্লকচেইন। ভার্চুয়াল মুদ্রার সমস্ত তথ্য এনকোড করা হয় ব্লকগুলিতে এবং এইভাবে একটি ব্লক আরেকটি ব্লকের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে।

প্রতিটি ব্লকে কিছু না কিছু তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা হয় এবং প্রত্যেকটি ব্লককে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ইউনিক নম্বর থাকে। এই ইউনিক নম্বরটিকে ‘hash’ বলা হয়। প্রতিটি ব্লকে তার পূর্ববর্তী ব্লকের hash তথ্য সংরক্ষিত থাকে।

ব্লকচেইন প্রযুক্তি কি?

আপনার কাছে ব্লকচেইন প্রযুক্তিটি নতুন মনে হলেও, মোটেই এটি একদম নতুন নয়। এই প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটে ১৯৯১ সালে। স্টুয়ার্ট হ্যাবার এবং ডব্লিউ স্কট স্টর্নেটা এই দুই ব্যক্তির হাত ধরে মানুষ প্রথম বুঝতে শুরু করেন ব্লকচেইন প্রযুক্তিকে।

ব্লকচেইন প্রযুক্তি মানেই হলো টাইমস্ট্যাম্প ডিজিটাল ডকুমেন্টস। এর অর্থ কি? এর অর্থ হলো অপরিবর্তনশীল ডিজিটাল তথ্যাদি। অর্থাৎ এই প্রযুক্তি দ্বারা ভার্চুয়াল মুদ্রা সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য সম্পূর্ণরূপে গোপন রাখা যায়। যা অন্য কেউই পরিবর্তন করতে পারবে না।

সাতোশি নাকামোতো নামক এক জাপানি ব্যক্তি ২০০৮ সালে এই প্রযুক্তিকে হাতিয়ার বানিয়েই তৈরি করে ফেলেন বিটকয়েন। আর তারপর থেকেই ব্লকচেইন প্রযুক্তির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।

ব্লকচেইন-এর ইতিহাস

১৯৯১ সালে স্টুয়ার্ট হাবের (Stuart Haber) এবং স্কট স্টরেনট্টো (W. Scott Stornetta)দুজন মিলে সর্বপ্রথম ব্লকচেইন প্রযুক্তি তৈরী করেন। অবশ্য নাকামোতোর বিটকয়েন আবিষ্কারের পরই এই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার শুরু হয়। এবং মানুষেরও এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন হয় বেশি করে।

ব্লকচেইন কাজ করে কিভাবে?

ব্লকচেইন সাধারণত peer to peer নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সক্রিয় থাকে। অর্থাৎ ব্লকচেইনের প্রত্যেকটি ব্লকে যেসমস্ত তথ্য সংরক্ষিত থাকে, তা ইন্টারনেট ব্যবহারকারী যে কোন ব্যক্তি যাচাই করে নিতে পারেন।

সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করে বলা যেতে পারে যে, এটি ব্যাংক বা কোন দপ্তরে রাখা লেজার নামক খাতাটির সমান। যে কোন ব্যাংক বা দপ্তরে এরকম একটি খাতা থাকে, যার মধ্যে সমস্ত তথ্য সংরক্ষিত থাকে। এই খাতাটিকে লেজার বলা হয়ে থাকে। শুধুমাত্র সেই দপ্তরের কর্মী ছাড়া অন্য কোন গ্রাহক বা তৃতীয় কোন ব্যক্তি সেই খাতাটিকে ব্যবহার করতে পারেনা। ব্লকচেইন প্রযুক্তিকেও ডিস্ট্রিবিউটেড ওপেন লেজার হিসেবে বলা যেতে পারে। ডিজিটাল মাধ্যমে ডিজিটাল কারেন্সির সমস্ত লেনদেন এই ব্লকচেইন প্রযুক্তির দ্বারা ব্লকে সংরক্ষিত থাকে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, যখন আপনি কোনো ক্রিপ্টো কয়েন অন্য কোনো ব্যক্তিকে পাঠাবেন, তখন সেই ব্যক্তির নাম, ঠিকানা সবই ব্লকের মধ্যে সংরক্ষিত হয়ে যায়। ব্লকটিকে hash দিয়ে সুরক্ষিত রাখা হয়। এইভাবে যত ভারচুয়াল কারেন্সির লেনদেন হয়, তা সবই ব্লকের মধ্যে সংরক্ষিত হতে থাকে। আর এই সকল ব্লক বিভিন্ন কম্পিউটার দ্বারা পরিচালনা করা হয়। একটির পর একটি ব্লক তৈরী হতে হতে ব্লকচেইন গঠিত হয়।

ব্লকচেইন প্রযুক্তির ব্লকগুলিকে বারবার ভেরিফাই করলে, ব্লকগুলিতে থাকা তথ্য আরও বেশি করে সংরক্ষন করা সম্ভব। এর ফলে এগুলি  অপরিবর্তন রাখা যায় দীর্ঘ সময়ের জন্য। আর এই কারনেই ব্লকচেইন প্রযুক্তির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ব্লকচেইন ব্যবহারের সুযোগ-সুবিধা

একনজরে দেখে নেওয়া যাক ব্লকচেইন প্রযুক্তির সুবিধাগুলি ঠিক কি কি:-

ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে আরো জানতে চোখ রাখুন বেঙ্গলি নিউজ ৩৬৫ এর পাতায়

Exit mobile version