Earthquake Facts: জেনে নিন ভূমিকম্প সম্পর্কিত ১২ টি চাঞ্চল্যকর তথ্য

Earthquake Facts: জেনে নিন ভূমিকম্প সম্পর্কিত ১২ টি চাঞ্চল্যকর তথ্য

গোটা বিশ্ব জুড়ে মাঝে মাঝে ভূমিকম্পের তাণ্ডব পরিলক্ষিত হয়। ভারত থেকে শুরু করে তুরস্ক সব জায়গায় ছোট বড় ভূমিকম্পের আঘাতে মানুষ জর্জরিত। সারা বিশ্বেই আজ ভূমিকম্পের প্রবণতা অনেক গুণ বেড়ে গেছে। ভূমিকম্পের পরেই সেটা নিয়ে নানারকম কথাবার্তা ছড়িয়ে পড়ে। তবে বেশিরভাগ মানুষই জানেনা এর প্রাকৃতিক সঠিক কারণ, চলুন আজকে জেনে নিই ভূমিকম্পের পিছনে ১২টি চাঞ্চল্যকর তথ্য (12 Shocking Earthquake Facts)।

সূচিপত্র (Table of Contents)

ভূমিকম্পের পিছনে ১২টি চাঞ্চল্যকর তথ্য (12 Shocking Earthquake Facts)
ভূমিকম্পের পিছনে ১২টি চাঞ্চল্যকর তথ্য জেনে নিন (12 Shocking Earthquake Facts)

১. ভূমিকম্পের কারণে দিনের দৈর্ঘ্যে তারতম্য লক্ষ্য করা যায়

Earthquake Facts #1
২০০৯ সালের ১১ই মার্চ জাপানের উত্তর-পূর্ব দিকে এক বিরাট ধরনের ভূমিকম্প হয়েছিল, এই ভূমিকম্পের ফলে পৃথিবীর ভারের বণ্টনে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিক্টার স্কেলের আট দশমিক নয়। এর ফলে দিনের দৈর্ঘ্য কমে যায় এবং পৃথিবী সামান্য দ্রুত গতিতে ঘুরতে শুরু করে। এই ভূমিকম্পের ফলে সেইদিন দিন ছিল ১.৮ মাইক্রো সেকেন্ড ছোট।

২. বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর প্রচুর ভূমিকম্প হয়

Earthquake Facts #2
যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল অফ সার্ভ এর রিসার্চ অনুসারে, প্রতিবছরই সারা বিশ্ব জুড়ে প্রায় ১৭ টি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা হয় ৭ আবার কখনো কখনো ৮ হতে পারে। বিভিন্ন ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সারা বছর জুড়ে গোটা বিশ্বে লাখেরও বেশি ভূমিকম্প হয়ে থাকে। কোন কোন ভূমিকম্পের প্রভাব বুঝতেই পারা যায় না কারণ তাদের মাত্রা খুব কম থাকে। আবার কখনো কখনো সেগুলো অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় হয় বলে বোঝা যায় না।

৩. ভূমিকম্পের কারণ চিহ্নিত করেছেন ব্রিটিশ একজন বিজ্ঞানী

Earthquake Facts #3
জন মাইকেল নামে ব্রিটেনের একজন বিজ্ঞানী ভূমিকম্পের পিছনের আসল কিছু কারণ আবিষ্কার করেছেন। জন মাইকেল ১৮০০ শতাব্দীর শুরুর দিকে এই আবিষ্কারটি করেছিলেন। সেই কারণেই তাকে ভূকম্পনবিদ্যার জনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তার গবেষণা অনুসারে, ভূপৃষ্ঠের অনেক নিচে শিলাখণ্ডের অবস্থানের পরিবর্তনের ফলে ভূমিকম্প হয়।

৪. ভূমিকম্পের ফলেই ১০ ফুট পশ্চিমে সরে যায় চিলির একটি শহর

Earthquake Facts #4
চিলি কনসেপসিওন শহর ২০১০ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি বিশাল এক ভূমিকম্পের শিকার হয়েছিল। এই বড় ধরনের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৮.৮। এই বিশাল ভূমিকম্পের আঘাতে পৃথিবীর কঠিন উপরিভাগে ফাটল ধরে এবং শহরটি পশ্চিম দিকে ১০ ফুট সরে যায়।

৫. ভূমিকম্পের প্রকোপের কথা মাথায় রেখে ইনকা সভ্যতার বাড়িঘর তৈরি হয়েছিল

Earthquake Facts #5
ইনকা সভ্যতার সময়কার স্থাপত্য ও প্যাগোডা নির্মাণ করা হয়েছিল একমাত্র ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির কথা মাথায় রেখে। মাচু পিচু শহর স্থাপনের সময় ইনকা সভ্যতার স্থাপত্যকর্মীরা একটা আদিমকালের জ্ঞান প্রয়োগ করে বাড়িঘর তৈরি করেছিল। এর ফলে তাদের তৈরি বাড়িঘর ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির প্রকোপে কম নষ্ট হতো।

৬. খাটো হয়ে যাচ্ছে এভারেস্ট

Earthquake Facts #6
২০১৫ সালে নেপালে যে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়েছিল তার ফলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.৮। হিমালয়ের বহু পর্বতের উচ্চতা এর ফলে কমে যায়। এমনকি মাউন্ট এভারেস্টও খাটো হয়ে যায় ১ ইঞ্চি।

৭. প্রশান্ত মহাসাগর হল বেশিরভাগ ভূমিকম্পের উৎসস্থল

Earthquake Facts #7
রিং অফ ফায়ার হল বেশিরভাগ ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু বা উৎস স্থল। বিশ্বে যত ভূমিকম্প হয় তার ৯০% হয় এই এলাকাটি জুড়ে। আর এই রিং অফ ফায়ার এলাকাটি প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত।

৮. স্থির জল থেকে গন্ধ বের হওয়া ভূমিকম্পের অন্যতম একটি কারণ

Earthquake Facts #8
বিভিন্ন ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানীদের মতে, ভূমিকম্প আসার আগে স্থির জল যেমন পুকুর নদী খাল বিল বিভিন্ন রকম জল থেকে দুর্গন্ধ নিঃসৃত হয়। আবার কখনো কখনো জল উষ্ণ গরমও হয়ে যায়। এইসবেরই পেছনে রয়েছে পৃথিবীর নিচে থাকা প্লেট, যা সরে যাওয়ার ফলে গ্যাস নির্গত হয় এবং তার থেকেই এই দুর্গন্ধ বের হয়। এই সময়ে বনের পশু পাখিদের আচরণেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।

৯. সান ফ্রান্সিস্কো সরে যাচ্ছে লস এঞ্জেলেস এর দিকে

Earthquake Facts #9
প্রতিবছরই প্রায় ২ ইঞ্চি করে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো সরে যাচ্ছে লস এঞ্জেলেস এর দিকে। আর সরছে সেই গতিতে যে গতিতে মানুষের আঙ্গুলের নখ বৃদ্ধি পায়। এই বিশাল পরিবর্তনের পিছনে কারণ হলো, সান অ্যান্ড্রিয়াস ফল্ট এর দুটো দিক একে অপরকে ক্রমশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যদি এরকম পরিস্থিতি থাকে, তবে বেশ কয়েক লাখ বছর পর দুটো শহরেই একত্রিত হয়ে যাবে।

১০. জলের ঢেউ ভূমিকম্পের পরেও উঠতে পারে

Earthquake Facts #10
ভূমিকম্প হয়ে যাওয়ার পরে আপনি পুকুরে কিংবা সুইমিং পুলের জলে মাঝে মাঝে ঢেউ দেখতে পাবেন। এই ঢেউকে বলা হয় শ্যাস। ভূবিজ্ঞানীদের মতে, ভূমিকম্প শেষ হয়ে যাবার পরেও জলের অভ্যন্তরীণ ভাগে এই তরঙ্গ দেখতে পাওয়া যায়।

১১. ভূমিকম্প হওয়ার আগে প্রাণীর আচরণ

Earthquake Facts #11
ভূমিকম্পের আগাম আভাস ব্যাঙরা বেশি টের পায়। তবে ২০০৪ সালের ভূমিকম্প অর্থাৎ সুনামি এবং ইন্দোনেশিয়াতেও যে ভূমিকম্প হয়েছিল তখন বহু মানুষ লক্ষ্য করে যে বিভিন্ন পশু পাখিরা উঁচুর দিকে উঠে যেতে থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ছোট ছোট কম্পন বন্যপ্রাণীরা উপলব্ধি করতে পারে।

১২. পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী ভূমিকম্পের কারণ

Earthquake Facts #12
বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনীতে দেখা যায় যে এক দ্বীপে বিশাল এক নামাজু নামের ক্যাটফিস মাটির নিচে চাপা পড়ে গিয়েছিল। অনুমান করা হয় এর ফলে প্রচুর ভূমিকম্প হয়েছিল। প্রাচীন গ্রীকরা বিশ্বাস করত যে, সমুদ্রের দেবতা পজিডন রেগে গিয়ে পৃথিবীর ওপর আঘাত হানলে তা ভূমিকম্পের আকার নিত।


ভূমিকম্পের পিছনে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য (Shocking Earthquake Facts) জানতে পড়ুন -> en.wikipedia.org/wiki/Earthquake

এই সংক্রান্ত বিস্তারিত খবর জানতে অবশ্যই চোখ রাখুন বেঙ্গলি নিউজ ৩৬৫ এর পেজে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *