শরীরের ওজন কমাতে চান? তাহলে মেনে চলুন এই সাত্ত্বিক আহার

শরীরের ওজন কমাতে চান? তাহলে মেনে চলুন এই সাত্ত্বিক আহার

বর্তমানে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে খুব সচেতন হতে দেখা যায়। এর ফলে বর্তমানে মানুষ শারীরিক চর্চার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ডায়েট চার্ট ফলো করেন। চিকিৎসকদের মতে, শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য আমাদের ডায়েট চার্ট ফলো করা উচিত। এই ক্ষেত্রে বৈদিক শাস্ত্রে এই ডায়েট হিসেবে সাত্ত্বিক আহারের কথা বলা হয়েছে। পুরাকাল থেকেই এই খাদ্যাভ্যাস প্রচলিত রয়েছে। এই আহার অভ্যাসের ফলে শরীর থাকবে সুস্থ এবং রোগহীন।

সাত্ত্বিক আহারের প্রয়োজনীয়তা

সাত্ত্বিক আহার যে শুধু মাত্র মানব শরীরকে সুস্থ রাখে তাই নয়, এর পাশাপাশি এই আহার অভ্যাস শরীরের অতিরিক্ত ওজনকেও নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে বলে জানা যায়। সাত্ত্বিক আহারকে এক ধরনের জীবনচর্চা হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে এই সাত্ত্বিক আহার মন থেকে গ্রহণ করতে না পারলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। বরং হতে বিপরীত হতে পারে। তাই এই কারো কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে এই খাদ্যাভ্যাস শুরুর আগে নিজের মনকে ভালো ভাবে প্রস্তুত করে নেওয়া শ্রেয়। তবে এই সাত্ত্বিক আহারকে লাইফস্টাইল ডায়েট হিসেবেও অভিহিত করা হয়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক এই সাত্ত্বিক আহারের গুনাগুন এবং সাত্ত্বিক আহার করার উপায়।

সাত্ত্বিক আহারের খাদ্য তালিকা

লাইফস্টাইল ডায়েট বা সাত্ত্বিক আহারের খাদ্য তালিকার মধ্যে প্রধানত যে সব খাদ্যগুলো রয়েছে সেগুলো হল শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম, অঙ্কুরিত গোটা শস্য, তাজা ফলের রস, ভেষজ চা ইত্যাদি। তবে এই সাত্ত্বিক আহারের একটি সতর্কীকরণ বিষয় হল যেসব ব্যক্তিরা আইবিএস বা অন্ত্র সমস্যায় ভুগছেন তারা এই সাত্ত্বিক আহার অনুসরণ করলে চলবে না। সাত্ত্বিক আহারে প্রচুর পরিমানে খাদ্যতন্তু থাকে। তাই সেই ব্যক্তিদের প্রয়োজন অনুযায়ী খাদ্য পরিকল্পনা করাই শ্রেয়। প্রয়োজনে খাদ্য উপাদান বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করে নেওয়া ভালো।

সাত্ত্বিক আহারের অনিয়মে শারীরিক ক্ষতি

অনেকেই এই সাত্ত্বিক আহার অনুসরণ করলে গ্যাস বা বদহজমে পেট ফুলে যেতে পারে। জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত চিনি বা সাত্ত্বিক আহারের বাইরের খাবার খেলেও এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তবে এই ফোলাভাব দূর করতে গেলে দুটো খাবারের মাঝখানে সময়ের ব্যবধান বাড়াতে হবে। এছাড়া এই সাত্ত্বিক আহার অনুসরণ করলে চিনি বা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না।

সাত্ত্বিক আহারের সতর্কীকরণ

এই আহারের আগে বা পরে অন্য কোনো খাবার খাওয়া যাবেনা। এছাড়া এই সাত্ত্বিক আহারের খাদ্য তালিকায় যে খাদ্যগুলি রয়েছে সেই খাদ্যের সাথে অন্য কোনো খাদ্য মিশিয়েও খাওয়া যাবে না। এছাড়া ঘুমোতে যাওয়ার আগে অনেকক্ষণ বসে থাকার অভ্যাস এড়িয়ে যেতে হবে। দরকারে সাত্ত্বিক আহার করার পর ৩০ মিনিট হালকা পায়চারি করা যেতে পারে।

সাত্ত্বিক আহার অনুসরণে এড়িয়ে চলার খাদ্য তালিকা

এই লাইফস্টাইল ডায়েট বা সাত্ত্বিক আহার অনুসরণ করতে গেলে এমন কিছু খাবার আছে যে খাবারগুলোকে এড়িয়ে চলতে হবে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মানুষ তেল মশলা জাতীয় খাবার খায়। তবে যেসব ব্যক্তিরা সাত্ত্বিক আহার অনুসরণ করবেন তাদের এইসব ভারি খাবার খাওয়া যাবেনা। এছাড়া অতিরিক্ত লবণ বা অতিরিক্ত চিনি খাওয়াও বন্ধ করতে হবে। সাত্ত্বিক আহার অনুসরণ করে শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য এড়িয়ে চলতে হবে মিষ্টি জুস, অ্যালকোহল যুক্ত পানীয় এবং তেল মশলা জাতীয় খাবার।

সাত্ত্বিক আহার করার উপায়

অনেক সময় শরীরে ক্যালোরির পরিমাণ বেশি হয়। ফলস্বরূপ, অতিরিক্ত চিনির চাহিদা বেড়ে যায়। এর ফলে সেই চিনি আমাদের শরীরে চর্বি হিসেবে জমা হয়ে শরীরের ক্ষতি করে। তাই খাবার খাওয়ার নির্দিষ্ট পরিমাণ থাকা দরকার। তবে এই সাত্ত্বিক আহার অনুসরণ করলে প্রথম দিকে এই খাবার খেয়ে মানসিক তৃপ্তিবোধ হবে না। তবে ধীরে ধীরে এই খাবারের সুগন্ধ এবং আয়োজন আপনার মনকে আকর্ষিত করে তুলবে। এর সাথে মানসিক তৃপ্তিবোধও হবে। এছাড়া এই সাত্ত্বিক আহার অনুসরণ করলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি সঞ্চয় হবে না। শরীরে প্রয়োজনীয় ক্যালোরি এবং পুষ্টি সরবরাহ হবে এই সাত্ত্বিক আহারের মাধ্যমে।

সাত্ত্বিক আহারের উপকারিতা

তাই শরীরকে সুস্থ এবং সচেতন রাখতে অস্বাস্থ্যকর খাবার না খেয়ে এই সাত্ত্বিক আহার অনুসরণ করলে বেশ ভালই ফল পাবেন বলে আশা করা যায়। তবে প্রথম প্রথম এই সাত্ত্বিক আহারের খাবার খেতে একটু কষ্ট করতে হবে। পরবর্তীকালে এই খাবার শরীরে সহ্য হয়ে গেলে আপনার স্বাস্থ্যের আরো উজ্জ্বল হবে বলে আশা করা যায়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আহার বা শরীর সংক্রান্ত অন্য কোনো বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই বিষয়ের কোনো বিশেষজ্ঞের সাথে অবশ্যই পরামর্শ নিয়ে নেওয়া উচিত।

এই রকম আরো আপডেট পেতে চোখ রাখুন বেঙ্গলি নিউজ 365 এর পাতায়।

Tags :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *