পুকুরে ইলিশ! অবাক কান্ড! কী বলছেন মৎস্যজীবী ও বিশেষজ্ঞরা?

পুকুরে ইলিশ! অবাক কান্ড! কী বলছেন মৎস্যজীবী ও বিশেষজ্ঞরা?

“পুকুরে ইলিশ -একথা বাঙালির কাছে রসিকতা হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু অদ্ভুত মনে হলেও জ্যান্ত ও সতেজ ইলিশ মাছ এবার পাওয়া গেল সেই পুকুরে! বাঙালি আর মাছ কথাটি একে অপরের সাথে অতপ্রতভাবে জড়িত। কথায় আছে মাছে-ভাতে বাঙালি। বর্ষাকালে খিচুড়ির সাথে ইলিশ ভাজা। এছাড়া সর্ষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ আরও কত কি? ইলিশের সব আইটেমই রয়েছে বাঙালির প্রিয় খাদ্য তালিকার মধ্যে।

কিন্তু গত দুই তিন বছরে, ইলিশের সেরকম ফলন হয়নি। তাই বাজারে মাছের দামও অত্যাধিক ছিল। তাই উচ্চবিত্তের পক্ষে মাছ কিনে খাওয়া সম্ভব হলেও সাধারণ নিম্নবিত্তের কাছে তা ভাবনার বাইরে। কিন্তু বিগত বছরগুলির তুলনায় এবার ইলিশের অনেক ভালো ফলন হয়েছে। সাধারণ মানুষেরাও হাত চেটে খেতে পেরেছেন ইলিশ। কিন্তু পরবর্তীকালে যদি আবার ইলিশের ফলন কম হয়, তবে কি পুকুরে ইলিশ চাষ হবে?

ইলিশের ধরন ও প্রকৃতি

ইলিশ হলো একটি লবনাক্ত জলের মাছ। তাই ইলিশের জন্ম সাগরেই বলা চলে। তবে মা ইলিশ ডিম পাড়তে লবনাক্ত জল ত্যাগ করে মিষ্টি জলে এসে বাস করে। বিগত বছরের তুলনায় এবারে নদীতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশের দেখা মিলেছে। কিন্তু পুকুরে ইলিশও যে ধরা পড়তে পারে – এই শুনেই সবাই অবাক। এই বছর বাংলাদেশের নদী থেকে সাগরে জাল ফেলতেই প্রচুর পরিমাণে ইলিশ উঠে আসছে। প্রায় সব রকমের ওজনের মাছ ধরা পড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় দাম তেমন একটা কমেনি। ফলে রুপলি ইলিশের ধারে কাছে যাওয়া যাচ্ছে না। সেই সুযোগে মৎস্যজীবীরাও প্রচুর পরিমাণে লাভ করেছেন।

তাহলে কি এবার পুকুরে ইলিশ চাষ হবে? / Hilsa farming in pond
Hilsa farming in pond: তাহলে কি এবার পুকুরে ইলিশ চাষ হবে?

পুকুরে ইলিশ কোথায় পাওয়া গেল?

পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার রায়হান নামক গ্ৰামে একটি বৃহৎ পুকুরে জাল ফেলতেই ধরা পড়েছে ইলিশ মাছ। শোনা যায় ১০০টির মতো ইলিশের দেখা মিলেছে সেই পুকুরে। একদম যে কম ওজনের তাও বলা চলে না (৪০০ গ্ৰাঃ – ৬০০ গ্ৰাঃ)। তবে মৎস্য দপ্তরের এখনও বোধগম্য হচ্ছে না এই মাছ ধরা পড়ার বিষয়টি।

মৎস্য দপ্তরের ভাষ্য মতে

মৎস্য দপ্তরের সূত্রে জানা যায়, ইলিশের আনাগোনা সাগরেই। কারণ সাগরের জল লবনাক্ত আর ইলিশ লবনাক্ত মাছ। শুধুমাত্র মা ইলিশ ডিম পাড়ার সময়ই সাগর সংলগ্ন নদীর মিষ্টি জলে গমন করে। কিন্তু পুকুরে ইলিশ ধরা পড়ার ব্যাপারটি এ বছরেই শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশের বরগুনা জেলার রায়হানপুর গ্ৰামেই এই ঘটনাটি ঘটেছে।

সিদাম মিয়ার প্রায় ৭৫ শতাংশ জায়গা জুড়ে এই পুকুর। প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরেও গত মঙ্গলবার তার ছেলে সুজন মাছ ধরতে নেমেছিল পুকুরে। এরকম করে প্রায় ৯৫টি ইলিশের দেখা মেলে। রীতিমতো সবাই অবাক। সিদাম মিয়ার বাড়িতে ভিড় জমে যায়। তারা জানান যে, সেই মাছ তারা প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের মধ্যে ভাগ করে দেন।

আরও পড়ুনঃ গুণগত মানের পরীক্ষায় ফেল ৪৮টি নিত্য প্রয়োজনীয় ওষুধ

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে খবর

মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, পুকুরে ইলিশ মাছ বেড়ে ওঠার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই (Department of Fisheries)। বরগুনার মৎস্য অধিকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, তিনি পরে অর্থাৎ সামাজিক গনমাধ্যম থেকে ঘটনাটি জেনেছেন। তিনি জানিয়েছেন ঘটনাটি সত্যিই। তবে ধারণা করেছেন, নদী থেকে ইলিশগুলি সাগরে ফেরার পথে বাধাগ্রস্ত হয়ে কোনো খাল বা জোয়ারের জলের সাহায্যে পুকুরে ঢুকে পড়েছে। তবে ব্যাপারটা খতিয়ে দেখছে মৎস্য অধিদপ্তর।


এই ধরনের আরও খবর পেতে চোখ রাখুন বেঙ্গলি নিউজ ৩৬৫ এর পাতায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *