রান্না করা খাবার দুবার করে গরম করে খাচ্ছেন? জেনে নিন কি মারাত্মক বিপদ আসছে সামনে?

রান্না করা খাবার দুবার করে গরম করে খাচ্ছেন? জেনে নিন কি মারাত্মক বিপদ আসছে সামনে?

যে রাধে, সে চুলও বাধে। বর্তমান সমাজে বেশিরভাগ মহিলা ব্যস্ত কর্মক্ষেত্রের সাথে, তাই তাদের হাতে সময়ও খুবই স্বল্প। সময় এবং পরিশ্রম দুই বাচাতে অনেকে ই একসাথে অনেক পরিমাণে রান্না করে রাখেন। কিন্তু রান্না করা খাবার বারবার গরম করলে তার গুণগত মান নিচে নেমে যায় ও তা স্বাস্থ্যের পক্ষেও অত্যন্ত ক্ষতিকর। সময় বাঁচাতে গিয়ে মানুষ নিজের বিপদ নিজেরাই ডেকে নিয়ে আসছে।

কোন কোন খাবার পুনরায় গরম করে খাবেন না

“জার্নাল অফ এগ্রিকালচার ফুড এন্ড কেমিস্ট্রির “একটি প্রতিবেদনে জানা যায় যে, কিছু কিছু খাবার এমন আছে যা বারবার গরম করলে তা পুষ্টিকর হয় না এবং তার স্বাদ ও নষ্ট হয়ে যায়। তাহলে এক নজরে দেখে নিয়ে তালিকা আছে কোন কোন খাবারের কথা। কোন কোন খাবার এমন যা একবারের বেশি গরম করা উচিত নয়!

আলুর তরকারি

সকালের ব্রেকফাস্টে লুচি বা রুটির সাথে আলুর তরকারি খুবই সুস্বাদু। বেঁচে গেছে অনেকটাই তাহলে আর ভাবনা নেই, রাতে রুটির সাথে সেটাই তো হয়ে যাবে। তাতে সময়ও বাঁচবে খাটনিও কমবে। কিন্তু আলুর তরকারি বারবার গরম করে খেলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। আলুর তরকারি যদি দুবার গরম করা হয় তার পুষ্টিগত গুণ নষ্ট হয়ে যায় এবং আমাদের পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মুরগির মাংস

বেশি পরিমাণে মুরগির মাংস রেঁধে ফেলেছেন? ভাবছেন তাই দিয়ে চালিয়ে দেবেন পরের দিনের খাবার। এই ভুলটা মোটেও করবেন না। মুরগির মাংস যখনই আপনি আবার গরম করবেন তখনই তার প্রোটিনের গঠন এ পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। বদ হজমেরও সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি একান্তই বেশি পরিমাণে মুরগির মাংস রান্না করে ফেলেন, তাহলে ফ্রিজ থেকে নামিয়ে ঘরোয়া তাপমাত্রা এনে তারপরে খান।

ডিম

ডিমের যেকোনো পদ গরম করে খাওয়া উচিত না, তা সে অমলেট হোক ,ডিম সেদ্ধ হোক ,ডিমের তরকারি হোক বা ডিম কষা। সুস্বাদু ডিম কষা অনেকেই বেশি করে রান্না করে রেখে দেন দুবেলা খাবেন বলে। রান্না করে ডিম দুবার গরম করলে তার প্রোটিন নষ্ট হয়ে যায় এবং জন্মায় নানারকম ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া যখনই মানুষের শরীরে প্রবেশ করে তখনই তা নানা রকম রোগীর সৃষ্টি করে।

শাক

সবুজ শাক টাটকা খাওয়া যতটাই স্বাস্থ্যকর কিন্তু গরম করে খাওয়া ঠিক ততটাই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। পালং শাক বৈশাখ কিংবা লাল শাক কোনটাই দুবার গরম করে খাওয়া উচিত নয়। শাকের মধ্যে থেকে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট কিন্তু যখনই আমরা শাক কে আবার গরম করব সেই নাইট্রেটের থেকে তৈরি হয় নাইট্রাসামাইন নামে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ। যা সত্যিই শরীরে পক্ষে ক্ষতিকর।

ভাত

সময় ও গ্যাস বাঁচাতে আমরা অনেক সময় দুইবারের ভাত একবারে বেশি করে করে রাখি এবং খাবার সময় গরম করি, যা আমাদের মোটেই করা উচিত না। গ্যাস থেকে নামানোর পর ভাত যখন ঘরের তাপমাত্রাতে রেখে দেওয়া হয়, তখন ঠান্ডা হলে নানা রকম ব্যাকটেরিয়া জন্ম হয় তাতে। সেই ঠান্ডা হাওয়া ভাতে যখন আবার গরম করা হয় তখন সেই ব্যাকটেরিয়া গ্রুপ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে শরীরের উপর।

টাটকা খাবার খাওয়াই বাঞ্ছনীয়

তাই আমাদের আরো সচেতন হতে হবে নিজেদের শরীর স্বাস্থ্যের উপর। সময় ও পরিশ্রম বাঁচাতে গিয়ে আমরা অনেক বড় বিপদ থেকে আনছি। আমাদের অবশ্যই চেষ্টা করা উচিত খাবার কম গরম করে খাওয়া। লোভনীয় আর সুস্বাদু খাবার মানে যে বেশি পরিমাণে রান্নাকরে দুইবেলা খাওয়া তা কিন্তু ঠিক নয়। তাই টাটকা রান্না করে খাওয়ার চেষ্টা করাই আমাদের শরীরের পক্ষে বাঞ্ছনীয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *