‘The Mummy’ সিনেমাটি দেখেছেন নিশ্চয়ই? এছাড়া মিশরের মমির কথা আমরা পড়েছি ইতিহাসেই। তৎকালীন যুগের মিশরীয় রাজা বা ফেরাও অথবা কোন প্রিয়জনদের মৃতদেহ বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে সংরক্ষিত করে মমি বানিয়ে রেখে দেওয়া হতো। সেই মমিকে ঘিরে অনেক জনশ্রুতি প্রচলিত রয়েছে।
আবার প্রাকৃতিক উপায়ে সৃষ্ট হওয়া বহু মমিও (Natural Mummy) খুঁজে পান প্রত্নতত্ত্ববিদরা। বরফের নিচে কোন মৃতদেহ বহু বছর থাকলে সেটি মমিতে পরিণত হয়। তেমনই এক মমিকে ঘিরে চতুর্দিকে সৃষ্টি হয়েছে শোরগোল। কেউ কেউ আবার একে বলছেন অভিশপ্ত মমি।
সূচিপত্র (Table of Contents)
ওটজি দ্য আইসম্যানের মমি (Otzi The Iceman Mummy)
আল্পস পর্বতের বুকে তুষার স্তুপের মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছিল ‘ওটজি দ্য আইসম্যান‘-এর মমিটি। এটি পৃথিবীতে আবিষ্কৃত প্রাচীনতম মমিগুলির মধ্যে একটি এবং কুখ্যাত। ১৯৯১ সালে উত্তর ইতালির বরফে ঢাকা আল্পস পর্বত থেকে উদ্ধার হয় এই মমিটি। গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে ৫৩০০ বছর পুরনো এটি। বরফের স্তুপের তলায় দীর্ঘ বছর থাকার ফলে এটি সুরক্ষিত ছিল। তবে বর্তমানে ইতালির বোলজ়ানো শহরের দক্ষিণ টাইরোল মিউজিয়ামে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে ওটজির মৃতদেহটি। এই মমিটিকে কুখ্যাত বা অভিশপ্ত বলার কারণ এটি উদ্ধারের পর থেকে উদ্ধার কার্যে জড়িত বহু মানুষের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়।
![How Otzi The Iceman looked in real life before it turned into a Mummy / মমিতে রূপান্তরিত হওয়ার আগে জীবন্ত অবস্থায় যেমন দেখতে ছিল ওটজি](https://bengalinews365.com/wp-content/uploads/2023/07/otzi-the-iceman-1024x538.jpg)
কিভাবে মৃত্যু হয় ওটজির?
ওটজির মমিটি উদ্ধারের পর গবেষণার মাধ্যমে জানা যায় আনুমানিক ৫৩০০ বছর পূর্বে মৃত্যু হয় এটির। এই মমিটি একটি পুরুষের মৃতদেহ। বোলজানোর কাছে বর্তমানে যেখানে ভেলটার্নো গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। এর মৃত্যুও স্বাভাবিকভাবে হয়নি, মাত্র ৪৬ বছর বয়সে তীর বিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়।
ওটজির মমি আবিষ্কারের পর প্রথম মৃত্যু (First death after the Otzi Mummy was found)
ওটজির মৃতদেহ আবিষ্কারের পর প্রথম মৃত্যু হয় রাইনার হেনের, যিনি ছিলেন ফরেন্সিক দলের প্রধান। গবেষণা চলাকালীন এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তার। জনসূত্র অনুযায়ী খালি হাতে রাইনার ওই মমির দেহটি স্পর্শ করেছিলেন।
এই মমির আবিষ্কারকের মৃত্যু (Death of the discoverer of the Otzi Mummy)
জার্মান পর্যটক হেলমুট সাইমন ওটজির দেহটি আবিষ্কার করেছিলেন। কথিত আছে সাইমনও খালি হাতে ছুয়েছিলেন ওটজির দেহ। সাইমনের মৃত্যুর পর বেশ কয়েক বছর বন্ধ ছিল গবেষণার কাজ। আবিষ্কারের প্রায় ১৩ বছর পরে আল্পসে পর্বতে অভিযান করার সময় তুষার ঝড়ে মৃত্যু হয় তারও। যে স্থানে ওটজির দেহটি আবিষ্কৃত হয়েছিল তার থেকে কিছু দূরে বরফে চাপা পড়েই তারও মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন -> Weird History: বিচিত্র পেশা, মানুষই মানুষের অ্যালার্ম ঘড়ি
![Is Otji the cause of these mysterious deaths? / ওটজির কারণেই কি ঘটছে এই রহস্যজনক মৃত্যুগুলি? এই নিয়ে বিতর্ক চলছে এখনো।](https://bengalinews365.com/wp-content/uploads/2023/07/otzi-1024x538.jpg)
ওটজি-এর সাথে যুক্ত অন্যান্যদের রহস্যজনক মৃত্যু (Death of others related to the mummy of Otzi The Iceman)
পরবর্তীতে ওটজি-এর আবিষ্কারক সাইমনের দেহটি উদ্ধার করতে যায় যে উদ্ধারকারী দল, তার প্রধান ডিয়েটার ওয়ারনেকেরও মৃত্যু হয় সাইমনের শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই।
পর্বতারোহী কুর্ট ফ্রিট্জর মৃত্যু হয় তুষারধসে তিনিও ছিলেন সাইমনের সাথে উদ্ধার কার্যে। একটি বিশেষ তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছিলেন ওটজি কে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাংবাদিক রাইনার হোয়েলজ। এই সাংবাদিকেরও মৃত্যু হয় অস্বাভাবিকভাবে। কাকতালীয় হলেও ওটজির উদ্ধার কার্যের সঙ্গে যুক্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। এটি আদৌ কোন অভিশাপ না জনশ্রুতি তা নিয়ে এত বছর পরেও রয়েছে দ্বন্দ্ব।
এই রুপ আরও খবর পেতে চোখ রাখুন বেঙ্গলি নিউজ ৩৬৫ এর পাতায়।