Maa Lakshmi: পুজো করুন মা লক্ষ্মীর, থাকুন ধন-সম্পদে পরিপূর্ণ

Maa Lakshmi: পুজো করুন মা লক্ষ্মীর, থাকুন ধন-সম্পদে পরিপূর্ণ

আপনি যদি মনে করে থাকেন মা লক্ষ্মী (Maa Lakshmi) শুধুমাত্র ধন-সম্পদের দেবী, তাহলে আপনি দেবীর পুরাণের ব্যাখ্যায় অবহিত নন। হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী লক্ষী মায়ের চারটি হাত – ধর্ম, কর্ম, অর্থ ও মোক্ষ।

মা লক্ষ্মী / Maa Lakshmi

একটু জেনে নেওয়া যাক, তিনি কে? যদিও এই নিয়ে একাধিক মতবাদ রয়েছে, তবুও আজকে আমরা জানার চেষ্টা করি তার আবির্ভাব সম্পর্কে। কেউ কেউ বলেন তিনি ছিলেন ঋষি ভৃগুর সন্তান এবং সমুদ্রমন্থনে তাঁর পুনর্জন্ম হয়। আবার অন্য একটি মত অনুযায়ী, তিনি সমুদ্রদেব বরুণের কন্যা। পুরাণমতে ব্রহ্মার সাত সন্তান, সপ্তঋষির মধ্যে ৬ জনই দেবী সরস্বতীর আরাধনা করে দৈবজ্ঞান লাভ করেন।

মা লক্ষ্মীর পূজো / Maa Lakshmi Puja
মা লক্ষ্মীর পুজো / Maa Lakshmi Puja

কিন্তু জানেন? প্রশ্ন তোলেন মহর্ষি ভৃগু। ক্ষুধার জ্বালা নাকি মহা জ্বালা? সেটি নিবারণ করতে বেরিয়ে পড়েন তিনি। এবং যথাযথ উত্তর পান সমুদ্রদেব বরুণের কাছে। মহর্ষি ভৃগু তার পরেই উপলব্ধি করেন যে মগজের বা মননের পুষ্টিলাভ যেমন হয় দেবী সরস্বতীর আরাধনায় তেমনই নশ্বর শরীরের পুষ্টির জন্য মা লক্ষ্মীর (Maa Lakshmi) আবাহন ও পূজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই মা লক্ষ্মীকে শুধুমাত্র ধনদেবী হিসেবে দেখলে তাঁর মহিমার সম্পূর্ণটা দেখা হয় না। তাঁর আশীর্বাদ মানুষের ক্ষুধা নিবারণের জন্য, গৃহস্থের সার্বিক কল্যাণের জন্য। কিন্তু অর্থলাভের সন্তুষ্টি কিভাবে সম্ভব, সেটার উপরে ছিল তার কড়া নজর।

মা লক্ষ্মীর প্রদত্ত সম্পদগুলি কি কি? / Blessings given by Maa Lakshmi

মোট ১৬ প্রকার সম্পদ প্রদান করেন তিনি — খ্যাতি, জ্ঞান, সাহস ও শক্তি, জয়, সুসন্তান, বীরত্ব, স্বর্ণ, অন্যান্য রত্নরাজি, শস্য, সুখ, বুদ্ধি, সৌন্দর্য, উচ্চাশা, উচ্চভাবনা, নৈতিকতা, সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘ জীবন।

মা লক্ষ্মীর পুজো ও দেবীকে প্রসন্ন করার রীতিনীতি / Maa Lakshmi Puja and Rituals

  • ঠাকুরঘরে বা ঠাকুরের সিংহাসনে কড়ি এবং শঙ্খ রাখা খুবই শুভ গৃহের কল্যাণের জন্য।
  • দক্ষিণাবর্ত শঙ্খকে বলা হয় মা লক্ষ্মীর শঙ্খ। লাল, সাদা বা হলুদ রংয়ের একটি পরিষ্কার কাপড়, একটি রুপোর পাত্র অথবা মাটির পাত্রের উপর রাখতে হয় এই শঙ্খ। এই শঙ্খের মধ্য দিয়েই মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ প্রবাহিত হয় বাসস্থানে।
  • প্রতিদিন মা লক্ষ্মীর প্রতিমা বা পটের সামনে দু’টি ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালালে তা মঙ্গল। এর সঙ্গে পদ্ম, নারকেল ও ক্ষীরের নৈবেদ্য দিলে প্রসন্ন হন দেবী।
  • একটি বাঁশের বাঁশিকে সিল্কের কাপড়ে মুড়ে ঠাকুরের সিংহাসনে রাখলে মা লক্ষ্মী প্রসন্ন হন কারণ বাঁশি হল বিষ্ণুর অবতার শ্রীকৃষ্ণের প্রিয়। তাই মা লক্ষ্মীরও অতি প্রিয়।
  • শুধুমাত্র পুজোর দিনে নয়, প্রতিদিনই যদি দেবীর পায়ের চিহ্ন আঁকা ভাল। প্রতিদিন না পারলে বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার এবং মা লক্ষ্মীর পুজোর তিথি থাকলে তো অবশ্যই।
  • যিনি প্রতি শুক্রবার পরমান্ন বা মিষ্ট অন্ন দিয়ে গোসেবা করেন তাঁর প্রতি বিশেষ প্রসন্ন হন দেবী।
  • বলা হয় সমস্ত দেবতা বাস করেন তুলসি বৃক্ষে আবার অন্য একটি মত অনুযায়ী দেবী তুলসি হলেন মা লক্ষ্মীরই এক রূপ। তাই বাড়িতে তুলসি বৃক্ষ থাকলে এবং সেখানে প্রতিদিন সেখানে প্রদীপ জ্বাললে তুষ্ট হন মা লক্ষ্মী।
  • প্রতি শুক্রবার পদ্মমূল থেকে তৈরি নয়টি সলতে দিয়ে একটি মাটির প্রদীপ মা লক্ষ্মীর পট বা প্রতিমার সামনে জ্বাললে তা গৃহে প্রাচুর্যের সমাহার ঘটায়।
  • ধারাবাহিকভাবে ১২ দিন ধরে সম্পূর্ণ ভক্তিভরে লক্ষ্মী দ্বাদশ স্তোত্র ১২ বার উচ্চারণ করলে ঋণমুক্তি ঘটে।
  • প্রতিদিন স্নান করে শুদ্ধ হয়ে লক্ষ্মী গায়ত্রী মন্ত্র ১০৮ বার জপ করলে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন মা লক্ষ্মী। এই মন্ত্র জপ করার সময় পদ্মবীজের মালা ব্যবহার করলে ভাল।
  • এছাড়া টানা ৩০ দিন ধরে মা লক্ষ্মীর প্রতিমা বা পটের সামনে নিষ্ঠাভরে শ্রী সুক্ত পাঠ করলে বিশেষ প্রসন্ন হন দেবী। শ্রী সুক্ত হল ১৫টি ভার্সের একটি সম্মেলন।

মা লক্ষ্মী (Maa Lakshmi) সম্বন্ধে আরও জানতে চাইলে পড়ুন এই উইকিপিডিয়ার পাতাটি

পড়ুন -> Shani Mantra: জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি পেতে এই শনি দেবের মন্ত্রগুলি অবশ্যই পাঠ করুন

এই রকম আরো খবর পেতে চোখ রাখুন বেঙ্গলি নিউজ ৩৬৫ এর পাতায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *