Osteoporosis: হাঁড় ক্ষয় থেকে মুক্তি পেতে চান? মেনে চলুন এই উপায়গুলি

Osteoporosis: হাঁড় ক্ষয় থেকে মুক্তি পেতে চান? মেনে চলুন এই উপায়গুলি

সাম্প্রতিক সময়ে মানুষের শরীরে আধুনিক লাইফস্টাইল ঘটিত নানা ধরনের রোগ দেখা দিচ্ছে, তাতে করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে গোটা মনুষ্য সমাজ। সেই সব রোগের মধ্যে একটি রোগ হলো হাঁড় ক্ষয় বা অস্টিওপোরোসিস (Osteoporosis)। এই রোগ ভবিষ্যতে ভয়ংকর বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে যে কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে। এমনকি এই হাঁড় ক্ষয়ের কারণে মৃত্যুও ঘটতে পারে। তবে ভয় পাবেন না, আছে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়। আজকের প্রতিবেদনে তেমনি কয়েকটি উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো।

হাঁড় ক্ষয় / Osteoporosis
হাঁড় ক্ষয় / Osteoporosis

কি এই হাঁড় ক্ষয় (Osteoporosis)

হাঁড় ক্ষয় এমন একটি রোগ যা চেপে রাখলে বয়সকালে ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তবে হাঁড় ক্ষয় শুরুতেই যদি আপনি এই রোগ ধরতে পারেন তাহলে আপনি ঠিকঠাক শরীরের পরিচর্যা করেন, তবে এই ঝুঁকি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তবে কিভাবে বুঝবেন আপনার হাঁড় ক্ষয় হচ্ছে কি হয়নি? বা হলেও কতটা হয়েছে? বা হাঁড় ক্ষয় হলে সেই রোগ থেকে মুক্তি পেতে গেলে কি করতে হবে? সেটাই জানানো হবে আজকের এই প্রতিবেদনে।

অস্টিওপোরোসিস (Osteoporosis)

হাঁড় ক্ষয়কে ডাক্তারি মতে অস্টিওপোরোসিস (Osteoporosis) নামে অভিহিত করা হয়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথার উদয় হয়। আর অস্টিওপোরোসিসের ফলে তৈরি এই ব্যথার কারণে ভেঙে যায় শরীরের বিভিন্ন স্থানের হাঁড়।

কি কারনে হয় এই অস্টিওপোরোসিস (Osteoporosis) বা হাঁড় ক্ষয়?

১) ক্যালসিয়ামের ঘাটতি (Calcium deficiency)

সাধারণ ডায়েটে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার এবং শরীরে ভিটামিন ডি এর যোগান কিংবা সংশ্লেষণ কম হলে হাঁড়ের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং অস্টিওপোসিস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

এছাড়া ডাক্তারদের মতে অস্টিওপোরোসিস তখনই হয় যখন হাঁড়ে নির্দিষ্ট ঘনত্বের পরিমাণ কমে যায়। এর পাশাপাশি ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে (calcium deficiency) হাঁড়ের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গিয়ে ক্ষয় দেখা দেয়। আর সেখান থেকেই ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে হাঁড়ের। যা ভবিষ্যতে ভয়ংকর বিপদ আনতে পারে।

২) পুরুষদের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন ও মহিলাদের ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতি

পুরুষ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে যথাক্রমে টেস্টেস্টেরন এবং ইনস্ট্রোজেন হরমোনকে সেক্স হরমোন বলা হয়ে থাকে। এই হরমোনের ঘাটতি পড়লে মানুষের শরীরে ক্যালসিয়ামের তারতম্য হতে শুরু করে। ফলস্বরূপ অস্টিওপোরেসিস হতে দেখা যায়।

৩) প্যারাথাইরয়েড ও থাইরয়েড গ্রন্থিজনিত সমস্যা

প্যারা থাইরয়েড ও থাইরয়েড গ্রন্থির ক্ষরণের সমস্যা হলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি (calcium deficiency) তৈরি হয়। ফলে হাঁড়ের গঠন ও স্বাভাবিক ভারসাম্য অনেকক্ষেত্রে নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া এটি একটি বংশগত রোগ।

বয়স অনুসারে অস্টিওপরোসিস / Osteoporosis by age
বয়স অনুসারে অস্টিওপরোসিস / Osteoporosis by age

হাঁড় ক্ষয় বা Osteoporosis থেকে মুক্তি পেতে কি কি করা প্রয়োজন?

ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী এই অস্টিওপোরোসিস থেকে মুক্তি পেতে গেলে নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে।

অ্যালকোহল বা মাদক সেবন বন্ধ করতে হবে।

ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খেতে হবে, অর্থাৎ দুগ্ধজাত খাদ্য, সি ফুড, দানা শষ্য জাতীয় খাবার বেশি করে গ্রহণ করতে হবে।

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খেতে হবে। প্রয়োজনে শরীরে রোদ লাগানো যেতে পারে (বেলা ১১ টা থেকে ২ টোর মধ্যে)।

ভিটামিন কে এর অভাবও অস্টিওপোরোটিক ফ্র্যাকচারের জন্য একটি ঝুঁকির কারণ। ভিটামিন কে ২ ও অস্টিওপরোসিসের চিকিতৎসার একটি উপায় হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

হাঁড়কে রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে পুষ্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সেই কারণে ঝুঁকির কারণগুলির মধ্যে রয়েছে খাদ্যে কম পরিমানে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, বোরন, আয়রন, ফ্লোরাইড, তামা, ভিটামিন এ, কে, ই এবং সি অতিরিক্ত পরিমাণে সোডিয়াম।

বয়ঃসন্ধিকালে কম প্রোটিন গ্রহণ এবং বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে খাদ্য তালিকায় কম পরিমাণে খনিজ পদার্থের উপস্থিতিও একটি কারণ।

শরীরে ওমেগা-৬ থেকে ওমেগা-৩ এর মত পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের ভারসাম্যহীনতা আরেকটি ঝুঁকির কারণ।

প্রয়োজনে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যেতে পারে।

অস্টিওপোরোসিস (Osteoporosis) এর লক্ষণগুলি

অস্টিওপোরোসিসের সাধারণত কোন উপসর্গ নেই। এর প্রধান পরিণতি হলো ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি। অস্টিওপোরোটিক ফ্র্যাকচার এমন পরিস্থিতিতে ঘটে যেখানে সাধারণ ও সুস্থ মানুষের হাঁড় ভাঙ্গে না। তাই সেক্ষেত্রে এই ভঙ্গুরতা ফ্র্যাকচার হিসাবে বিবেচিত হয়। মূলত মেরুদণ্ড, পাঁজর, নিতম্ব এবং কব্জিতে এই ফ্র্যাকচার গুলি ঘটে।

তবে এই রোগের তেমন কোনো উপসর্গ বা লক্ষণ না থাকলেও নিয়মিত যদি ঘাড়ে ও পিঠে ব্যথা হতে থাকে, কিংবা হাঁড় ও পেশিতে ব্যথা হতে থাকে তবে সাবধান হতে হবে।

কিভাবে বুঝবেন অস্টিওপোরোসিস (Osteoporosis) হয়েছে কিনা?

ডাক্তারি মতে উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা দিলে এক্স-রে‐এর মাধ্যমে অস্টিওপোরোসিস রোগ ধরা যায়। এছাড়া বিএমডি পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগে কতটা ক্ষয় হয়েছে তার সঠিক মাত্রা জানতে পারা যায়। সেই মাত্রা জানতে পারা গেলে তা দেখে ঠিকঠাক চিকিৎসা করতে পারে ডাক্তাররা। ফলেই হাঁড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি থেকে মুক্তি পাবেন অস্টিওপোরোসিস রোগের ব্যক্তিরা।


হাঁড় ক্ষয় বা অস্টিওপোরোসিস (Osteoporosis) সম্বন্ধে আরো জানতে পড়ুন :

উইকিপিডিয়া -> https://en.wikipedia.org/wiki/Osteoporosis
ভারত সরকারের জাতীয় স্বাস্থ্য পোর্টাল -> https://www.nhp.gov.in/disease/musculo-skeletal-bone…

এই ধরনের আরো খবর পেতে চোখ রাখুন বেঙ্গলি নিউজ ৩৬৫ এর পাতায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *