আপনার কি PCOD রয়েছে? নিয়মিত পিরিয়ড হয় না? এর সমাধান কি?

আপনার কি PCOD রয়েছে? নিয়মিত পিরিয়ড হয় না? এর সমাধান কি?

যুগ যত আধুনিক হচ্ছে তত রোগের শিকার হচ্ছে মানুষ। PCOD বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ, অথবা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম প্রতি পাঁচ জন ভারতীয় নারীর মধ্যে এখন একজন নারী এর শিকার। অনেকে হয়তো এই ব্যাপারে ভালোভাবে জানেনও না। আজ আমরা এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

PCOD এর শিকার সেলিব্রিটিরাও

আপনারা সারা আলী খান-এর নাম নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন। তাঁর এখনকার অভিনেত্রী সুলভ ফিগার দেখে অনেকেই হয়ত ঈর্ষান্বিত হন বা চান তার মত ফিগার পেতে। কিন্তু আপনাদের জানিয়ে রাখি সারা আলি খান কিন্তু প্রথম থেকেই এমন ফিগারের অধিকারিনী ছিলেন না। একসময় তাঁর ওজন ছিল ৯৬ কেজি। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? সেই ফিগারের তাঁর বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে। চাইলে দেখে নিতেই পারেন। এই প্রবল ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী পিসিওডি।

সোনাম কাপুরও এই রোগের শিকার। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে এই রোগের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। পিসিওডি এবং পিসিওএস এর মূল কারণ হরমোনের তারতম্য। এই কারণেই পিরিয়ড নিয়মিত হতে চায় না। নির্দিষ্ট বয়স পার করার পর প্রতিটি মেয়ের ডিম্বাশয় থেকেই প্রতি মাসে ডিম নির্গত হয়। সেই ডিম নিষেক না ঘটলে তা রক্তের মাধ্যমে দেহের বাইরে বেরিয়ে যায়। একেই আমরা পিরিয়ড বা ঋতুচক্র বলে থাকি। পিসিওডির কারণে এই পিরিয়ড নিয়মিত হতে চায় না, ফলে ওজন বেড়ে যায়‌।

PCOD বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ সম্বন্ধে সকলের সুনির্দিষ্ট তথ্য জানার প্রয়োজন রয়েছে।
PCOD বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ সম্বন্ধে সকলের সুনির্দিষ্ট তথ্য জানার প্রয়োজন রয়েছে।

রোগ সনাক্ত করবেন কিভাবে?

বাইরে থেকে সহজে বোঝা যায় না। তবে হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি এর অন্যতম বড় লক্ষণ। এছাড়াও অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা তো রয়েছেই। তাছাড়াও পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত ব্যথা ও মুড সুইং।

তবে কেবলমাত্র যে ওজন বাড়লেই পিসিওডি তা কিন্তু নয়। অনেক সময় হঠাৎ করে রোগা হয়ে যাওয়া এর একটি বড় লক্ষণ। এছাড়াও রয়েছে চুল ঝরে পড়া, ব্রণের সমস্যা ও সারা দেহে লোমের বৃদ্ধি। আল্ট্রাসাউন্ড এর মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।

PCOD বা PCOS রোগ নিরাময়ের উপায়

সাধারণত এই রোগ ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যেই বেশি দেখা দেয়। এই রোগ হলে ভয় পাবেন না ডাক্তারের পরামর্শ মত ওষুধ খাবেন, নিয়মিত ব্যায়াম ও সঠিক আহার গ্রহণ করবেন। অনেকেই হয়ত আপনাকে বলতে পারে পিসিওডি (PCOD) হলে বাচ্চা হয় না। কিন্তু সেই কথা গ্রাহ্য করবেন না। আপনি যদি সঠিকভাবে ওষুধ খান, ব্যায়াম করেন ও পরিমিত আহার গ্রহণ করেন তাহলে অন্যান্য মেয়েদের মতন আপনিও সন্তান ধারণ করতে পারবেন। তবে নিজের দিকে একটু বেশি খেয়াল রাখতে হবে আপনাকে। আর অবশ্যই স্ট্রেস কম নেবেন।

আরও পড়ুন -> Infertility Treatment: বন্ধ্যাত্ব – কিভাবে হবে সঠিক চিকিৎসা?

1. সাধারণ কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে দিন

এটি আপনার এই রোগের উপসর্গ কমানোর প্রথম ধাপ। কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করতে পারেন, যেমন বাকউইট, বার্লি এবং ব্রাউন রাইস।

2. আপনার অ্যালকোহল সেবন নিয়ন্ত্রণে রাখুন

অ্যালকোহল লিভারকে প্রভাবিত করে এবং হরমোনের ওঠানামা ঘটায়। অতএব, অ্যালকোহল গ্রহণ সীমিত করা এই উপসর্গগুলি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

3.তরল এর পরিমাণ বাড়ান

জল আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে এবং টক্সিন বের করে দেয়। প্রতিদিন অন্তত ৩-৪ লিটার জল পান করলে তা ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে। আপনি গ্রিন টিও ব্যবহার করে দেখতে পারেন, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এবং মহিলাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টি শরীরের মেদ কমাতেও সাহায্য করে।

4. পর্যাপ্ত শাকসবজি খান

আপনার ডায়েটে আরও শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য রাখুন। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার সামগ্রীতে সমৃদ্ধ শাকসবজি, যেমন পালং শাক, আর্টিচোক এবং কেল, PCOD ও PCOS-এ সাহায্য করতে পারে। এখনও যে পুষ্টির অভাব রয়েছে তা পূরণ করতে আপনি মাল্টি-ভিটামিন নিতে পারেন। এক্ষেত্রে Amway এর মাল্টি-ভিটামিন ‘Daily’ ভীষনই কার্যকর। কিন্তু কোন বড় খাদ্য পরিবর্তন করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে ভুলবেন না।

5. ধূমপান ত্যাগ করুন

ধূমপান এন্ড্রোজেন উৎপাদন বাড়ায়। অতিরিক্ত এন্ড্রোজেন এই রোগের সবচেয়ে বিশিষ্ট লক্ষণগুলির কারণ হয়। সিগারেট কমানো শুধুমাত্র PCOD/PCOS উপসর্গকে কমিয়ে দেয় না বরং ফুসফুসের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

6. নিয়মিত ব্যায়াম করুন

ব্যায়াম করার অনেক সুবিধা রয়েছে। আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা থেকে শুরু করে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমানো পর্যন্ত। এই রোগাক্রান্ত মহিলারা উচ্চতর কোলেস্টেরলের মাত্রা অনুভব করতে পারে, যা ব্যায়ামের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

7. নির্দিষ্ট খাবার কমিয়ে দিন

আপনাকে খাসির মাংস এবং প্রক্রিয়াজাত চিনির মতো খাবার এড়িয়ে চলতে হতে পারে। ডেজার্ট, মিষ্টি, কোল্ড ড্রিঙ্কস ইত্যাদি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।


PCOD এবং PCOS একে অপরের থেকে সামান্য আলাদা – এই সম্বন্ধে জানতে পড়ুন এই পাতাটি

এই রকম আরো খবর পেতে চোখ রাখুন বেঙ্গলি নিউজ ৩৬৫ এর পাতায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *